নারীকে আল্লামা শফি তেঁতুলের সাথে তুলনা করা যুক্তিযুক্ত

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ১৪ জুলাই, ২০১৩, ১০:০০:৫৩ রাত

টিভি নিউজে এবং অন লাইন সামাজিক মিডিয়া গুলোতে আল্লামা শফি সাহেবের কয়েকটি বক্তব্য নিয়ে জড়-তুপান বইছে। বাম রামদের তুপান শরীর ও মনের উপর দিয়ে তেমন না বইলেও আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর আল্লামা শফি সম্পর্কে বক্তব্য কিন্তু আমাদেরকে নাড়া দিয়েছে। প্রধান মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আল্লামা শফিকে লক্ষ্য করে বলেছেন, "উনি কি কোন মায়ের পেট থেকে জন্ম গ্রহন করেনি, তারকি কোন মেয়ে নাই স্ত্রী নাই, তাদের প্রতিওতো সম্মান রেখে কথা বলতে পারতেন। উনি (আল্লাম শফি) যে নেত্রীর পাশে বসেন, তাকে তেতুল মনে করে জিব্বায় লালা আসলে আমাদের করার কি আছে"। আজ সংসদও গরম ছিল আল্লামা শফির বক্তব্য নারীকে তেতুলের সাথে তুলনা করাকে নিয়ে। অনেকে আল্লামা শফির বিচারও দাবী করছেন।হযরতুল আল্লাম বেগম মতিয়া চৌধুরী সংসদে ওয়াজ করেছে যে, আল্লামা শফির নাকি ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নাই। দেশের বিশিষ্টজনরাও প্রেস নোট দিয়েছেন আল্লামা শফির বক্তব্য ন্যাক্কার জনক।অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী মানববন্ধন করেছেন, আল্লামা শফিকে গ্রেফতার করার জন।

আসলে আল্লামা শফি সাহেব, নারীতে পুরুষে পরাস্পর পরাস্পরের প্রতি আগ্রহ আকর্ষন বুঝাই গিয়ে নারীকে তেঁতুলের সাথে তুলনা করেছেন। এ কথাও ঠিক যে, নারীর শরীর তেঁতুল ধর্মী এবং পুরুষে শরীর লবন ধর্মী। লবন তেঁতুলের কাছে গেলে গলে যায়। আর যে লবন তেঁতুলের কাছে গলবেনা সে লবন লবন না, ফিটকেরী হতে পারে। আমার খুব অবাক লাগে যে, এটি একটি সত্য কথা এবং স্বাভাবিক কথা । এতে নারীদের ইজ্জত আর মান যাওয়ার কি আছে। আমাদের দেশে যখন কোন কবি তার কবিতায়, উপন্যাসিক তার উপন্যাসে নারী দেহের বৃত্তান্ত ফুটিয়ে তুলেন, তখন নারীর মান যায় না। নাটক সিনেমায় নারীকে ধর্ষনের দৃশ্য, প্রেমিক প্রেমিকার অন্তরাঙ্গ দৃশ্য খুব নিখুত ভাবে দেখানো হয় তথন নারীর ইজ্জত যায় না। নারীকে স্কাট পরিয়ে অর্ধনগ্ন করে রাস্তায় অথবা গানের ভিডিও চিত্রে উপস্থাপ করেন তখন তাদের মানে লাগে না। আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম যখন বলেন, "ওরা দেবী ওরা লোভি ওরা চায় সর্বজন প্রীতি এক পেয়ে তুষ্ট নয় একজনে খুশি নয় যাচে বহুজন" তখন নারীর সম্মানের ক্ষতি হয় না। যখন হুমায়ূন আজাদ বলেন, "গর্ভবর্তী নারী গর্ভবর্তী পশুর মত" তখন নারীরা তাকে সাহিত্যিক বলে, যখন তিনি নারীর দেহ তত্ব নিয়ে "নারী" নামক গ্রন্থ রচনা করেন তখন তাকে বাহ বাহ দেয়া হয়। যখন সৈয়দ শামছুল হল লিখেন, "যখন দু’স্তন মেলে ডেকে নিলে বুকের ওপরে,

স্বর্গের জঘন খুলে দেখালে যে-দীপ্তির প্রকাশ,

তখন কী হলো আমি কোন্ ভাষে বলবো কী করে?

মুহূর্তেই ঘুচে গেলো তৃষিতের অপেক্ষার ত্রাস।

বৃষ্টিও বৃষ্টি তো নয় - জরায়ুর রক্তিম ক্রন্দন।

আজ তিনদিন থেকে অবিরাম, ক্ষান্তি নেই তার।

নিষেধ পতাকা লাল, পতাকায় শরীরী স্পন্দন

তবুও তবুও জাগে, জাগে ইচ্ছা সেখানে যাবার।

শত বাধা সত্ত্বেও থামতে পারে না কামুক পুরুষ। দুজনের দেহ ছিঁড়ে বের হয় দুধ-পূর্ণিমা। আর তা নেমে আসে স্তনের চূড়ায়। বাড়তে থাকে কামনার জ্বর। আর জ্বরতপ্ত হাত কুড়ায় কামনার ফুল। এ টান শুধু এক পক্ষের নয়। সমানতালে দুজনের। অবশেষ ভেঙে যায় বাঁধ -

তবে ভিজে যাক সব, বৃষ্টি থাক, এসো ভিজে যাই -

জ্বরের আগুনে দেহ লাল বৃষ্টিধারায় ভেজাই॥

....

তখন নারীদের হৃদয় কাঁদে না। সবার কষ্ট হয় যখন আল্লামা শফি বলেন নারীদের দেহ তেঁতুলের মত। ধিক এ সকল বুদ্ধিজীবিদের।

অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী তছলিমা নাসরিনের মত ৩টি স্বামী শেষ করেছেন, নাটকে তাকে নায়ক .......... করতে দেখা গেছে, রাজাকাররা ধর্ষন করতে দেখা গেছে । তখন তার কি নারীত্ব জাগে নাই? জেগেছে কি আল্লামা শফি তেঁতুল বলাতে?

এদের এ ভাওতাবাজি দেলে আমার একটি কিচ্চা মনে হয়।

কিচ্চা হলঃ

তিনজন মিলে পুকুর পাড়ে জামাতে নামাজ পড়তেছে, সামনে ইমাম, তার পিছনে দু'জন মুক্তাদি। মাঝ নামাজে এক মোক্তাদি দেখলো পুকুরে একটি মাছ নড়াছড়া করতেছে। মুক্তাদি বলে উঠলো এই দেখ মাছ একটা।

২য় মুক্তাদি বললো, এই নামাজে কথা বলা নিষেধ।

ইমাম সাহেব বললেন, আমি কথা বলিনি।

..........................

হায়রে নিয়তি! যে মুক্তাদি বললেন, নামাজে কথা বলা নিষেধ, তিনি কি তখন কবলছেন না? ইমাম সাহেব যখন বলেছেন, আমি কথা বলিনি, তখন তিনি কথা বলছেন না?

সেরকম আমাদের নারী নেত্রী, নারী পক্ষ, বিশিষ্টজন, কবি, সাহিত্যিক অভিনেতা অভিনেত্রী ও নেতা নেত্রীরা । যখন তারা নারীদের দেহ নিয়ে সরাসরি খেলা করেন, রঙ্গ করেন তখন তারা নারীদেরকে খাঁট করেন না, প্রশংসা করেন? শুধু আল্লামা শফি উপমায় বা তুলনায় বললে অন্যায়। আল্লাহ এ জাতিকে হেদায়েত কর। সব জায়গায় রাজনীতি করার থেকে রক্ষা কর।

বিষয়: বিবিধ

১৬৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File